পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তার উচ্চ বেতন নিয়ে গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের এক দিন পরই এমন নির্দেশনা এল। বুধবার (৮ মে) বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিসিপিসিএলে পাঠানো এক তাগিদপত্রে বলা হয়, ‘বিসিপিসিএলের টপ ম্যানেজমেন্টের; অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ও গ্রেড-২–এর কর্মকর্তাদের বেতনকাঠামো সরকারি ইউনিফাইড সার্ভিস রুলস অনুযায়ী সংশোধন বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থা বিদ্যুৎ বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে পরামর্শ প্রদান করা হলো।’
এতে বলা হয়, সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য নির্ধারিত বেতনকাঠামো যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে অনুসৃত হলেও বিসিপিসিএল কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক হারে বেতন প্রদানের বিষয়ে ৬ মে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার নির্দেশে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুসারে বেতনকাঠামো সংশোধন করতে গত ১৭ নভেম্বর বিসিপিসিএলকে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এ বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত জানায়নি বিসিপিসিএল।
প্রসঙ্গত, সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য নির্ধারিত একটি বেতনকাঠামো রয়েছে। যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও সেই কাঠামো অনুসরণ করা হয়। ২০১৬ সালে যখন পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয়, তখন সেখানেও একই কাঠামো অনুসরণ করে বেতন ঠিক করা হয়। অবশ্য ২০১৯ সালে এক বোর্ড সভায় শীর্ষ পর্যায়ের পদগুলোয় বেতন অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটি কার্যকর হয় ২০২০ সালে।ওই সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মূল বেতন (বেসিক) ১ লাখ ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭ লাখ টাকা। সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ বিভিন্ন ভাতা যোগ করে মোট বেতন দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকা। বেতনকাঠামোর দ্বিতীয় ধাপের (গ্রেড) কর্মকর্তাদের মূল বেতন ১ লাখ ৪৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ভাতাসহ দাঁড়ায় প্রায় ৯ লাখ টাকা। যদিও মধ্যম পর্যায়ে বেতন বাড়ানো হয় সামান্য হারে। নিম্ন পর্যায়ে বেতন মোটেও বাড়েনি।পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে একই বছরের ২৬ আগস্ট। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর পর এখন পর্যন্ত কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন